সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনায় বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।
সংস্থাটি বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের শাখা (একিউআইএস) বিস্তার রোধ করাই সরকারের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ।
আইসিজির জুলাই মাসের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারকে নিরপেক্ষভাবে আইন প্রয়োগ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে আইসিসি।
প্রতিবেদনে আইসিজি বলেছে, ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানে গত ১ জুলাই নৃশংস হামলা চালিয়ে ২২ জনকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই বিদেশী। ঢাকায় জিম্মি করে হত্যা করার এই ঘটনা এবারই প্রথম ঘটলো।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা অভিজাত ও শিক্ষিত তরুণ। তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক সদস্যের ছেলেও রয়েছে।
আইএস এ হামলার দায়দায়িত্ব স্বীকার করেছে। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ এবং কর্মকর্তা ইঙ্গিত করছেন এ ঘটনায় একিউআইএসেরও সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া গত ৩ জুলাই এ হামলার নিন্দা করেছেন।
সাত মাস আগে ভারতে পালিয়ে গিয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকা এক ব্যক্তি গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করেছে বিশেষ তদন্ত দল। তারা বলছে, হামলার ঘটনাটি জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), আনসারুল ইসলাম (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) এবং হিযবুত তাহরির যৌথভাবে ঘটিয়েছে।
শোলাকিয়ায় হামলার ব্যাপারে আইসিজি বলেছে, গত ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহে হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ সারা দেশে অভিযান চালিয়ে জেএমবি এবং আনসারুল ইসলামের ব্যাপক সংখ্যক সদস্যদের গ্রেফতার করেছে।>
গত ২৬ জুলাই পুলিশের অভিযানে ঢাকায় সন্ত্রাসবাদী হিসেবে অভিযুক্ত ৯ জন নিহত হয়েছেন।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরী একজন নতুন সন্দেহভাজন হিসিবে চিহ্নিত হয়েছে, যাকে গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার মূল পরিকল্পনাকারী মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সংঘটিত উদ্দেশ্যমূলক হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় গত ১ জুলাই দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় ঝিনাইদহ জেলায় একজন হিন্দু পুরোহিতকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে।
আইসিজির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার মুখোমুখি হয়েছে। এছাড়া আর্মেনিয়া ও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ সুদান, মালি, তুর্কি, সিরিয়া, আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।