দ্বৈত নাগরিকদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, প্রবাসী বাংলাদেশীদের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা হবে। তবে দেশের সংবিধান অনুযায়ী তারা গণপ্রতিনিধিত্বকারী কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে যোগদানের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত নেতারা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাতকালে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতারা দ্বৈত নাগরিক নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দাবি করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো অবস্থায় দ্বৈত নাগরিকরা এ দেশের মন্ত্রী সংসদ সদস্য বা জনপ্রতিনিধি হতে পারবেন না।
অনুষ্ঠানে জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড.এম এ মোমেন, ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল দাস গুপ্ত, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফায়জুর রহমান ফারুক, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসলিম উদ্দিন খান লিটন, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ সভাপতি বজলুল রশীদ বুলু, সুইডেন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আতোয়ার রহমান, সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. আশরাফুল ইসলাম প্রমূখ আলোচনায় অংশ নেন।
বৈঠকে প্রবাসীরা দেশের যেকোনো নির্বাচনে অংশগ্রহনের অধিকার নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা, ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ইস্যু করা, সিলেট বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ লাউঞ্জ খোলা, বিমানবন্দরে সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা এবং বিদেশে মৃত বাংলাদেশীদের লাশ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে ফেরত আনা।
প্রবাসীদের উদ্দেশ অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ এখন আর কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সমর্থন করে না। এখন আর হরতাল হয় না। দেশের সাধারন মানুষই তাদের প্রতিহত করে। আর একারণেই দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বিগত অর্থবছরের জিডিপি হার চূড়ান্ত করেছে। তারা বলেছে, গত অর্থবছর এ হার ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। চলতি অর্থবছর জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। আমরা আশা করছি, এটা আরো এক শতাংশ বেড়ে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়ন গত অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সচেষ্ট রয়েছে। আশা করছি, তারা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে। এরপরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারে প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের আইন-শৃংখলা ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। সরকারের সদিছছা থাকলেও নানা প্রতিকূলতার কারণে অনেক কিছু সম্ভব হয় না।
বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের জন্য আমাদের কনফিডেন্স বেড়েছে। এখন পদ্মা সেতুসহ অনেক বড় বড় প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করার সাহস পাচ্ছি। আমারা এতদিন সহজ ঋণে ছোট ছোট ঋণ নিতাম। এখন আমরা বড় ঋণ নেয়ার সাহস অর্জন করেছি। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।