১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশ থেকে গত বছর সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে পাচার হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারত থেকে পাচার হওয়া অর্থের প্রায় সমান। পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও নেপালের মতো দেশগুলো থেকে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ বাংলাদেশের তুলনায় নস্যি।
এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে ৯৩৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বেশি পাচার হয়েছে। এই হিসাব ইঙ্গিত করে যে বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকগুলোতে যে হারে অর্থ পাচার বাড়ছে, তাতে আগামী বছরই ভারতকে টপকে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ পাচারকারী দেশের তকমা মিলবে বাংলাদেশের।
অর্থ পাচার প্রতিরোধে সরকারের সব সংস্থার হাঁকডাকের মধ্যেই এই বিপুল পরিমাণ অর্থপাচারের ঘটনা ঘটছে। গত বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রিয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক দেশটির ব্যাংকগুলোর ২০১৬ সালের সামগ্রিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড, ২০১৬ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে কী পরিমাণ অর্থ ওই দেশের তাতে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের এসব তথ্যের উল্লেখ রয়েছে। নগদ অর্থের পাশাপাশি সোনাসহ অন্যান্য মুল্যবান ধাতুও সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে রাখে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা।
পাচার হওয়া অর্থের হিসাবে ওই সব ধাতুর মূল্য যোগ করা হয়নি। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতির জন্য পাচারের ঘটনা বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। অবৈধ টাকা চিহ্নিত করে এসব টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। এই অবৈধ পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
বলা যায় বিদেশে অর্থ পাচার রোধে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে ব্যাপারেই উদ্যোগী হতে হবে। স্বাধীনতার পর সব আমলেই বাগদাদের চোরদের আছর ছিল। তাদের সবার পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা দুদকের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। বিদেশ থেকে অর্থ ফেরত আনা নিয়ে দুদক রাজনীতিতে প্রবৃত্ত হবে না। রাজনীতিমুক্ত একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া চালু হোক-এটাই আমরা দুদকের কাছে প্রত্যাশা করি।
অর্থ পাচার সুইস ব্যাংকে
![](https://www.rockinrioacademy.com/wp-content/uploads/2017/07/9999.jpg)