মরণব্যাধি ক্যান্সারকে দ্রুত এবং কার্যত কোনো বাধা ছাড়াই শরীরে ছড়িয়ে দেয়ার নতুন আরও সাতটি বাহকের খোঁজ পেয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।
ক্যান্সারের সম্ভাব্য স্রষ্টাদের তালিকায় নতুন ওই সাত বাহকের সন্ধান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অব হেল্থ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস’। তালিকাটি তারা তুলেও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) হাতে। খবর আনন্দবাজারের।
মার্কিন সংস্থা ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্টাল হেল্থ সায়েন্সেস (এনআইএইচ)’ এর ‘ন্যাশনাল টক্সিকোলজি প্রোগ্রামে’র ‘ফোর্টিন্থ রিপোর্ট অন কার্সিনোজেন (আরওসি)’ গত ৩ নভেম্বর প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে নতুন ওই সাত সম্ভাব্য ক্যান্সার নাম জানানো হয়েছে। এর ফলে, তালিকায় ক্যান্সারের সম্ভাব্য বাহকের সংখ্যা বেড়ে হল ২৪৮।
নতুন সাত সম্ভাব্য বাহকের মধ্যে পাঁচটিই ভাইরাস। এদের মধ্যে রয়েছে- ১. মানুষের শরীরে থাকা ‘টি-সেল লিম্ফোট্রোপিক ভাইরাস টাইপ-ওয়ান’, ২. ‘এপস্টিন-বার ভাইরাস’, ৩. ‘কাপোসি সারকোমা-অ্যাসোসিয়েটেড হার্পস-ভাইরাস’, ৪. ‘মার্কেল সেল পলিওমা ভাইরাস’ এবং ৫. ‘হিউম্যান ইমিউনো-ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস টাইপ-ওয়ান’ (এইচআইভি-ওয়ান)।
আর বাকি দুটি বাহকের অন্যতম- একটি রাসায়নিক মৌল কোবাল্ট ও তার কয়েকটি যৌগ। অন্যটি একটি জৈব যৌগ- ‘ট্রাইক্লোরোইথিলিন’।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের দাবি, নতুন যে পাঁচটি ভাইরাসের নাম তালিকায় যুক্ত হয়েছে, তারা কমপক্ষে ২০ রকমের ক্যান্সার সৃষ্টি ও তার বাড়বাড়ন্তের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এদের মধ্যে এইচআইভি-ওয়ান ভাইরাস এইড্স ছড়ানোর পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাটিকেও পঙ্গু, দুর্বল করে দেয়। ফলে মানুষের শরীরে ক্যান্সারের স্রষ্টা অন্য ভাইরাসগুলোর আক্রমণ প্রতিরোধের শারীরিক ক্ষমতাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়।
ক্যান্সারের সম্ভাব্য নতুন পাঁচটি ভাইরাসের কোনোটিরই টিকা বা প্রতিষেধক এখনও বের হয়নি। কবে নাগাদ আবিষ্কার হবে, তারও কোনো সময়সীমা নেই। ফলে ভাইরাসগুলো উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে সদ্য আবিষ্কৃত সাত বাহক থাকলেই কি মানবশরীরে ক্যান্সার হবে- এমন প্রশ্নে আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জয়তী সিংহ বলছেন, ‘এটা মোটেই শতভাগ নিশ্চিত নয়। তাই প্রতিবেদনে ওই নতুন সাত বাহককে সম্ভাব্য বলা হয়েছে।’
এছাড়া যিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন, তার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা, ওই নতুন সাত বাহকের তীব্রতা কতটা, আর সেই তীব্রতা কমানোর ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করে বলে তিনি জানান।