আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবনা প্রত্যাহার দাবি বিএনপির

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণের প্রতি যে দায়বদ্ধ নয় তার প্রমাণ হলো গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব। প্রস্তাবিত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি এবং মানুষের জীবনযাত্রার ওপর কি প্রভাব ফেলবে সে বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা না করে দাম বাড়ানো হবে চরম খামখেয়ালিপনা এবং তা জনগণের জীবনযাত্রায় মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবেই নেমে আসবে।

অবিলম্বে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবনা প্রত্যাহার করে নিতে তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি জানিয়ে বলেন, তা না হলে দেশের মানুষ এর বিরুদ্ধে একদিন রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হবে।

রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

এসময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ সাংগঠনকি সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, জালাল আহমেদ মজুমদার, জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, আবদুল আউয়াল খান, সাইফুল ইসলাম পটু, ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আয়োজিত গণশুনানিতে বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মীর মসিউর রহমান আবাসিক ব্যবহারকারীদের গ্যাসের দাম দ্বিগুন করার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এর মাধ্যমে এক চুলার মাসিক বিল ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১০০ টাকা এবং দুই চুলা ৬৫০ থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করার প্রস্তাব তাদের। গত বছর ২৭ আগস্ট গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় বিইআরসি। সে সময় এক চুলা ব্যবহারকারীদের ৬০০ টাকা এবং দুই চুলা ব্যবহারকারীদের ৬৫০ টাকা পরিশোধ করার কথা বলা হয়। আগে এক চুলা ব্যবহারকারীদের ৪০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৪৫০ টাকা পরিশোধ করতে হতো।

বর্তমান সরকারের আমলে দফায় দফায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সমালোচনা করেন মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, মাত্র ৮/৯ মাস আগে সকল ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম একবার বৃদ্ধি করা হলো। বিইআরসির বিধিবদ্ধ আইনানুযায়ী এক বছরের আগে অথবা কম সময়ের মধ্যে দাম বাড়ানোর কোনো বিধিবদ্ধ আইন নেই। তাই এই প্রস্তাব বেআইনি ও গণবিরোধী।

তিনি অভিযোগ করেন, জিটিসিএল কেনো গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব আনলো- এটা দেশের মানুষের কাছে বড় একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন। জিটিসিএল বর্তমানে বার্ষিক মুনাফা হচ্ছে চারশ’ কোটি টাকা। এই প্রতিষ্ঠানটি লোকসানী প্রতিষ্ঠান নয়। তাহলে কেনো তাদের আরো মুনাফার জন্য জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে, এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, চিন্তিত ও আমরা প্রতিবাদ করি। আমরা মনে করি, এরকম মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানের গ্যাস সঞ্চালন চার্জ বৃদ্ধির আদৌ কোনো প্রয়োজন নাই।

আলাল বলেন, সরকার ইতোমধ্যে আবাসিক কাজে নতুন গ্যাস সংযোগ দেয়া বন্ধ ঘোষণা করেছে। তাহলে কোন স্বার্থন্বেষী মহলের সুবিধাপ্রাপ্তির জন্য এই প্রস্তাব? এখন সরকার যদি ন্যূনতম জীবনমান ধারণের বেলায়ও জনগণের দুর্দশায় ফেলে শুধু মুনাফাখোরই হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে একদিন রাস্তায় নেমে আসবে।

বর্তমান সরকারের আমলে আট দফা গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন যদি পুনরায় গ্যাসের দাম সর্বক্ষেত্রে বাড়ানো হয়, তাহলে রফতানি বাণিজ্যে সমস্যা দেখা দেবে এবং গোটা অর্থনীতিতে একটা বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এটা ইতোমধ্যে ব্যবসায়ী সমাজও বলেছেন। সরকার যদি জনগণকে সেবা দেয়ার পরিবর্তে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর মতো মুনাফার দিকে ঝুঁকে পড়ে সেটা সরকারের গণবিচ্ছিনতাই প্রমাণ করে। সেটা আমরা বারংবার বলে আসছি যে এই সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গ্যাস ক্ষেত্রে বিদ্যমান দুর্নীতি রোধ করা গেলে গ্যাসের দাম বাড়াতে হবে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.