আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমল পার্বত্য ভূমি কমিশন

পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমছে। চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমিয়ে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন ২০১৬ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

ক্ষমতা কমল পার্বত্য ভূমি কমিশন চেয়ারম্যানের

সচিবালয়ে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।

পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কিছু সংশোধনের প্রস্তাব ছিল। সে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি। মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, আইনে বড় কোনো সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়নি। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর আঞ্চলিক পরিষদের প্রধান সন্তু লারমার কিছু সংশোধনের প্রস্তাব ছিল। সেই ভিত্তিতে এটি সংশোধন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগের আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যানসহ দুজন হলে কোরাম হতো, নতুন আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যানসহ চারজন হলে কোরাম হবে।

শফিউল আল বলেন, আগে কমিশন চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হতো। আইন সংশোধন হলে চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্ত কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে আর কোনো বিষয় চূড়ান্ত হবে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের ৯ সদস্যের মধ্যে চেয়ারম্যানসহ দুজন উপস্থিত থাকলেই এতদিন কোরাম হতো। আইন সংশোধনের হলে কোরামের জন্য চেয়ারম্যানসহ অন্তত তিন সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে।

ভেটিং শেষে মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়ে আইনটি পাসের জন্য সংসদে যাবে জানিয়ে সচিব বলেন, সংসদ যেহেতু দুই মাস পরে বসবে, তাই ইমার্জেন্সি বিবেচনায় এটাকে অধ্যাদেশ আকারে জারির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইন সংশোধনের ফলে কমিশন চেয়ারম্যানের ক্ষমতা খর্ব হলো কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঠিক খর্ব বলি না, একটু মডিফাই করা হয়েছে, এখন একক সিদ্ধান্ত নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সব প্রস্তাবই যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া সামরিক-বেসামরিক অন্যদেরও মতামত নেওয়া হয়েছে।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসান ঘটে। সেই চুক্তি অনুযায়ী পাহাড়ের ভূমির অধিকার নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে এই কমিশন গঠন করা হয়। তবে কমিশনের চেয়ারম্যানের হাতে একক সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা থাকায় ওই কমিশন কার্যকর হচ্ছিল না বলে অভিযোগ করে আসছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা), যিনি জনসংহতি সমিতির সভাপতি।

১৯৯৯ সালের ৩ জুন গঠিত ভূমি কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক চৌধুরী দায়িত্ব নেওয়ার আগেই মারা যান। ২০০০ সালের ৫ এপ্রিল পুনর্গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি আবদুল করিম দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পর শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।

২০০১ সালের ২৯ নভেম্বর পুনর্গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মাহমুদুর রহমান ২০০৭ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত তেমন কোনো কাজ করতে পারেননি। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার-উল হক বর্তমানে এই কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.