গাইবান্ধার একটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট না দেওয়ায় ওই এলাকার বন্যাদুর্গত মানুষদের ত্রাণ দিচ্ছেন না ইউপি চেয়ারম্যান এমন অভিযোগ ভূক্তভোগীদের।
প্রায় ১৪ দিন ধরে হাজার হাজার বিপন্ন মানুষ একটি বাঁধের উপর মানবেতর জীবন যাপন করলেও তাদের খোঁজও নিচ্ছেন না তিনি।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়ার ওয়াপদা বাঁধে গেলে এ প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা।
তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, গজারিয়া ইউনিয়ে ১ থেকে ৪ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত ৫ হাজার ভোটার রয়েছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল আলমকে নৌকা প্রতীক ভোট দেননি ওই এলাকার ভোটাররা। ভোট দিয়েছেন মশাল প্রতীকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের প্রার্থী খোরশেদ আলমকে। তবে জয়ী হয়েছেন শামসুল আলমই। আর ক্ষমতা পেয়ে এবার শোধ নিচ্ছেন তিনি।
গজারিয়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, চেয়ারম্যানেক ভোট দেই নাই। সেই ক্ষোভেই খোঁজ নেয় না। কোনো ত্রাণও দেয়না।
লিলি বেগম বলেন, ভোট তো দেইনি। জোর কইরেই নিছে। এখন হামাগরে ত্রাণ দেয় না চেয়ারম্যান। ১৫ দিন হল, দেখবারও আসে নাই। সব দেয় বাঁধের অন্য দিকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামসুল আলম বাংলানিজকে এক গাল হাসি দেন। সত্যিই খোঁজ নেননি, ভোট দেয়নি বলে ত্রাণ দেন না-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই তিনবার গেছি ওয়াপদা বাঁধে। তারা বোধহয় দেখে নাই। এছাড়া একসঙ্গে তো আর সব জায়গায় ত্রাণ দেওয়া যায় না। পর্যায়ক্রমে সব জায়গায় দেওয়া হবে।
গজারিয়ার নতুন এ চেয়ারম্যান গত ১৬ জুলাই শপথ নিয়েছেন। মঙ্গলবার (০২ জুলাই) তার আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন শুরু হয়।
ওয়াপদা বাঁধটি গজারিয়া থেকে শুরু হয়ে বালাসী ঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত। গাইবান্ধার ফুলছড়িই শুধু নয়, সাঘাটা ও সদর উপজেলা থেকেও এ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন সব মিলিয়ে সত্তর হাজারে বেশি মানুষ।
৩১৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ফুলছড়ি উপজেলায় জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ। যার বেশির ভাগই বন্যা কবলিত। আর বাঁধ ভাঙ্গায় আশে পাশের উপজেলাও প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার উত্তরে গাইবান্ধা সদর, পূর্বে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলা, পশ্চিমেও সদর এবং সাঘাটা উপজেলা অবস্থিত।
গত জুলাইয়ের প্রথম থেকে ভারতে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। এতে দেশের উত্তারাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা হয়। এখনো যমুনার পানি বিপদসীমার ২০ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ এখন বানভাসী।