বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতকে তেল পরিবহনের অনুমতি দিয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। ভারী বর্ষণ এবং পাহাড়ি ভূমিধ্বসের কারণে আসাম হতে ত্রিপুরাগামী সড়কপথ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণে মানবিক কারণে বাংলাদেশ বিকল্প পথে তেল পরিবহনের এই অনুমতি দিয়েছে। তবে এজন্য সড়কের ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় বাবদ নির্ধারিত ফি প্রদানে সম্মত হয়েছে ভারত।
বাংলাদেশের পক্ষে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এবং ভারতের পক্ষে ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন লিমিডেটের (আইওসিএল) নির্বাহী পরিচালক চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন ও আইওসিএল’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারী বর্ষণ এবং পাহাড়ী ভূমিধ্বসের কারণে আসাম হতে ত্রিপুরাগামী সড়কপথ (NH-44) ক্ষতিগ্রস্ত হবার ফলে ত্রিপুরার সাথে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের যোগযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ত্রিপুরা রাজ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসহ জ্বালানী তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জ্বালানীর অভাবে ত্রিপুরার পরিবহণ ক্ষেত্রে দুরাবস্থা বিরাজ করছে। ত্রিপুরাবাসী ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছে। এই অবস্থা নিরসণে ও মানবিক কারনে আসাম হতে বাংলাদেশের আংশিক সড়কপথ ব্যবহার করে ত্রিপুরায় জ্বালানী তেল ও এলপিজি পরিবহণের জন্য ভারত বাংলাদেশের সহযোগিতা চেয়েছে। প্রস্তাবানুযায়ী, ভারতীয় জ্বালানিবাহী ট্রাক বাংলাদেশে তামাবিল সীমান্ত চেকপোষ্ট দিয়ে প্রবেশ করে সিলেট ও মৌলভীবাজারের প্রায় ১৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে। এরপর মৌলভীবাজার জেলার চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে বের হয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করবে। ত্রিপুরায় জ্বালানি তেল সরবরাহের পর খালি যানবাহনগুলো বাংলাদেশের চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে পুনঃপ্রবেশ করে একই পথ ব্যবহার করে ভারতে ফিরে যাবে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, ত্রিপুরার জনগণের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধন এবং সর্বোপরি মানবিক অবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশের সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতীয় জ্বালানি তেলবাহী ট্রাক-লরি ত্রিপুরায় সাময়িকভাবে (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত) যাতায়াত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন দিয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি এমওইউ দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের সড়ক ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় বাবদ নির্ধারিত ফি দিতে ভারত সম্মত হয়েছে।