আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

থাইল্যান্ডে গণভোট: নতুন সংবিধানের পক্ষে রায়

থাইল্যান্ডের এক গণভোটে সেদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার একটি নতুন সংবিধানের পক্ষে রায় দিয়েছে।
প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ৬০ শতাংশ ভোটারই নতুন সংবিধানের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
এই সংবিধান বলবত হলে দেশটির রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর অবস্থান স্থায়ী রূপ লাভ করবে।
তবে থাইল্যান্ডের মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই সংবিধানের প্রস্তাবগুলোর সমালোচনা করেছে।
তারা বলছে, এর ফলে নিবাচিত রাজনীতিবিদদের ওপরে নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।
২০১৪ সালে ইংলাক চিনাওয়াতের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরপরই সেনাবাহিনী পুরোনো সংবিধান বাতিল করে দেয়।
তারপর সেনাবাহিনীর তৈরি একটি কমিটি নতুন একটি সংবিধানের খসড়া তৈরি করে।
তার ওপরেই আজ গণভোট হলো।
প্রস্তাবিত এই সংবিধান এমন নির্বাচনী ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যার ফলে কোনো একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
অন্যতম বিতর্কিত আরেকটি প্রস্তাব হচ্ছে, থাই সংসদের উচ্চকক্ষ সেনেটর ২৫০ জন সদস্যই নিয়োগ করবে সেনা সরকার।
সেনা অভ্যুত্থানের আগে এই সংখ্যা ছিল অর্ধেক।
প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ৬০ শতাংশ থাই ভোটার নতুন সংবিধানের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ফলে, ভবিষ্যত সরকার নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষমতা থাকবে।
প্রস্তাবিত সংবিধানের সমর্থকরা বলছেন এতে থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতা দুর হবে এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।
থাইল্যান্ডে গণভোট: নতুন সংবিধানের পক্ষে রায়Image copyrightAFP
Image caption
গণভোটের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ৬০ শতাংশ থাই ভোটার নতুন সংবিধানের পক্ষে ভোট দিয়েছে
কিন্তু থাইল্যান্ডের সমস্ত প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তাবিত এই সংবিধানের বিরোধীতা করেছে।
তাদের কথা ২০১৪ সালের সেনা অভ্যূত্থানকে বৈধতা দিতে এবং একইসাথে রাষ্ট্র পরিচালনায় সেনাবাহিনীর ক্ষমতা আরো বাড়োনোর একট কৌশল হিসাবে নতুন এই সংবিধান করা হচ্ছে।
তবে গণভোট বর্জন করেনি রাজনৈতিক দলগুলো।
ভোট দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইংলাক চিনাওয়াতও।
ভোট দেওয়ার সময় থাই জনগণকে বোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি “থাইল্যান্ডের জন্য আজকের দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আজকের দিনটি গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ন। বিষয়টি বুঝে মানুষকে তার মতামত দিতে হবে। ঘরে বসে থাকা ঠিক হবে না”।
মিস চিনাওয়াত বুঝে শুনে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন কারণ বহু মানুষের পরিস্কার কোনো ধারণা নেই নতুন এই সংবিধানে ঠিক আছেটা কী, এবং তাতে লাভ ক্ষতি কী হবে।
এর প্রধান কারণ প্রস্তাবিত এই সংবিধানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রচারণা নিষিদ্ধ করে সেনাবাহিনী। প্রচারণা চালানোর অভিযোগে অনেককে আটক করে।
এমনকি নিরপেক্ষ ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
থাইল্যান্ডের সেনা সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গণভোটে প্রস্তাবিত সংবিধানটি পাশ হলে, আগামী বছর শেষ নাগাদ নতুন নির্বাচন হবে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
তবে সমালোচকদের ভয়, নতুন সংবিধানের আওতায় যে গণতন্ত্র আসবে তা প্রকৃত কোনো গণতন্ত্র হবেনা, এবং ভবিষ্যতের সরকারের ওপর সেনাবাহিনীর প্রভাব প্রতিপত্তি বহুগুণে বেড়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.