বরিশাল অফিস : ক্ষমতার চেয়ারে বসে অর্ধেক সময়ের মধ্যেই নিঃস্ব করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। আগামীতেও নির্বাচন করার স্বপ্ন বুনছেন মেয়র। গত ২০১৬ সালের ঘাম ঝড়ানো স্থায়ী ৫ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অর্ধ বছর এক মাসের বেতন এবং অস্থায়ী প্রায় ১২শ শ্রমিকরা শ্রমের ন্যায্য পাওনা মজুরী নতুন বছর ২০১৭ সালে পা দিলেও পায়নি। কবে নাগদ পাবে শ্রমের ন্যায্য পাওনা বেতন তাও খোলশা করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মেয়র বলছেনা। অভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শ্রমিকরা কৈফিয়ত চেয়ে বকেয়া বেতন ভাতার দাবীতে আগামীকাল বিসিসি’র সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখে ঐক্যবদ্ধ ভাবে নগর ভবনে আন্দোলনে নামবে বলে জানায় অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শ্রমিকরা। ক্ষুব্ধ এসকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান ক্ষমতার চেয়ারে বসা থেকেই মেয়র আহসান হাবীব কামাল ক্ষমতাসীন দলের নয় এমনটা বলেই ঢেড়া পিটিয়ে তাদের পুতুলের মত নাচিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিল করে আসছে। আর তাদেরকে প্রতিনিয়তই করা হচ্ছে বঞ্চিত। এছাড়াও তারা অভিযোগ করে জানান, আমাদের বেতন বকেয়া রাখা হচ্ছে মেয়রের নিজ স্বার্থ হাসিলের ভিন্ন একটি কৌশল মাত্র। ফান্ডে টাকা নেই কর্মচারীদের বেতন বকেয়া এমটা বলে মন্ত্রণালয় থেকে শত কোটি টাকার প্রকল্পের কাজের।টাকারনবরাদ্দ আনলেও ব্যক্তি লাভবান হয়ে আসছেন তিনি। এদিকে ক্ষমতার চেয়ারে বসা থেকে মেয়র ক্ষমতার দাপটে বিসিসি’র নিজস্ব রেকর্ডিয় ৪নং খতিয়ান, জেএল নং- ৪৮ আমানতগঞ্জ মৌজার ৯৯৫ দাগে ৫ একর ৫৮ শতাংশ জমিটির উপর লোলুপ দৃষ্টি থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের না হওয়ায় বারংবার ব্যর্থ হয়েছে প্লট আকারে বিক্রির আশায়। তবে তিনি ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতাধর কতিপয়দের তার নিজ স্বার্থ হাসিলে সামিল করে চেষ্টা অব্যহত রাখে। ৫ একর ৫৮ শতাংশের ২ একর এখনও পিডিবি’র দখলে থাকলেও সেদিকে নজর না দিয়ে ব্যক্তি লাভবানের জন্য ক্ষমতার অর্ধেকটা সময় পার করার পর অর্ধবছর একমাস এবং শ্রমিকদের প্রায় তিন মাস বেতন বকেয়া এমন বিসিসি’র দূরাবস্থার চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন আনতে সক্ষম হয় প্লট আকারে বিক্রির। বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪৬ বছর জমিটি দখল করে ছিল পিডিবি’র কতৃপক্ষ। সাবেক প্রায়ত মেয়র শওকত হোসেন হিরনের চেষ্টার ফলে জমিটি উদ্ধার করে বিসিসি’র সুবিধা বঞ্চিত অসহায় কর্মচারীদের অল্প ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা করে স্টাফ কোয়ার্টার করে। এছাড়াও সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার বিসিসি’র জমি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভূমিকা পালন করে। সরোয়ার ও হিরন বিসিসি’র ভবিষ্যৎ প্রকল্পের কথা চিন্তা করে গোটা দেশের সিটি কর্পোরেশনের ন্যায় জমির পরিমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে মেয়রের যথাযথ ভূমিকায় বরিশালের সিটি কর্পোরেশনের সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে নানা প্রতিকূলতায়ও জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত না নিয়ে সমন্বয় করে সমস্যার সমাধান করে এসেছে। এদিকে মেয়র কামালের এমন লোলুপ দৃষ্টিতে নিঃস্ব হতে বাকী নেই বিসিসি বলে মনে করে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিএনপির বরিশাল মহানগরের এক সিনিয়র নেতা এবং বিসিসি’র এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানায়, বিএনপি পন্থী বিসিসি’র মেয়র আহসান হাবীব কামাল সুক্ষ্ম বুদ্ধি মাথার রাজনীতিবীদ। ফান্ডে টাকা থানা সত্ত্বেও হিসাব রক্ষককে নিজ দলে টেনে ফান্ডে টাকা নেই তেমন আয় হচ্ছেনা এমন বুলি আওড়িয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং গরীব অসহায় শ্রমিকদেরও প্রায় অর্ধ বছর ১ মাস বেতন বকেয়া রেখেছে। যার ফলে বেতনের দাবীতে প্রায়শই বিসিসি থাকে উত্তপ্ত। আন্দোলনের ফায়দা বঞ্চিতরা না পেলেও মেয়র নিজে ভোগ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে বিসিসি’র করুন দৃশ্য উপস্থাপন করে। এমতাবস্থায় গত ২০১৬ অর্থ বছরে বিসিসি’র জেনারেল শাখা নরমাল খাতে ফান্ডে টাকা নেই, আয় হচ্ছেনা, মেয়র নিজ মুখেই বহুবার বললেও অদ্ভুত ভাবে প্রায় ১শ ১০ কোটি টাকার টেন্ডার দেয়া হয়েছে নিজস্ব তহবিল থেকে। অপর দিকে জানা গেছে বিসিসি সুত্রে,বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৩য় পরিষদের ৬ষ্ঠ সাধারণ সভায় ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মেয়রের সভাপতিত্বে বিসিসি’র দখলে থাকা ৬নং ওয়ার্ডের আমানতগঞ্জ এলাকায় সম্প্রসারণ সহ ওভারহেড পানির ট্যাংকি, স্টোরের মধ্যে ২ একর জমির মধ্যে ১টি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, ১টি মসজিদ কাম মাদ্রাসা কমপ্লেক্স এবং সাবেক প্রায়ত মেয়র শওকত হোসেন হিরন এর প্রতিশ্রুতি ১টি কমিউনিটি সেন্টার নির্মানের পরিকল্পনা বিসিসি’র রয়েছে বলেন। এছাড়া অবশিষ্ট এক একর ৫৮ শতাংশ জমি পরিত্যাক্ত রয়েছে বলে প্রতিটি স্থাপনার সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা রেখে বাকী প্রায় ১ একর কমি প্লট আকারে ভূমিহীন জনসাধারণের মাঝে বাসস্থানের নিমিত্তে পরিকল্পিত ভাবে প্লট আকারে বরাদ্দ করার প্রস্তাব রাখে মেয়র কামাল। তিনি প্রস্তাব রেখে আরও বলেন, প্লট আকারে জমি বরাদ্দ দিয়ে পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গড়ে উঠবে। বরাদ্দকৃত প্লটের প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে গৃহীত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রায় ৬৮ বছর দখল করে ছিল পিডিবি। সাবেক মেয়র প্রায়ত মেয়র হিরন অনেক চেষ্টার পরে বিসিসি’র রেকর্ডিয় ২ একর জমি দখল মুক্ত করে এবং সুবিধা বঞ্চিত কর্মচারীদের স্টাফ কোয়ার্টার নির্মান করে তাদের স্বল্প ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। প্রতি মাসে স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাস করা কর্মচারীদের বেতন থেকেই সরাসরি ভাড়া বাবদ টাকা কর্তন করে রাখা হয়। কিন্তু এসকল কর্মচারীদের উচ্ছেদের কথায় সায় না দিয়ে মেয়র কামালের বিরোধীতা করে অধিকাংশরাই। এতে প্লট বিক্রির চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নতুন ফন্দি এটে মেয়র বিরোধীতা করা অধিকাংশদের বেতন-ভাতাদি বন্ধ করে দিয়ে অর্ধ বছর পার করে দেয়। কর্পোরেশনের ফান্ডে টাকা নেই, আয়ের থেকে কয়েক গুন ব্যয় বেশী, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ২৫ কোটি টাকা হয়ে দাড়িয়েছে এবং আন্দোলন সংগ্রাম দাবী সমূহের চিত্র কাজে লাগিয়ে বিসিসি’র করুন অবস্থা মর্মে মন্ত্রণালয় থেকে প্লট বিক্রির একটি অনুমোদন আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। আর এরই মধ্যে মেয়র বিসিসি’র স্টাফ কোয়ার্টারে থাকা কর্মচারীদের কোয়ার্টার ত্যাগ করার জন্য মেয়র আহসান জাবীব কামাল এস্টেষ্ট অফিসার মাহাবুবুর রহমান শাকিল কে নির্দেশ দ মাহাবুবুর রহমান শাকিল কে নির্দেশ দিলে তিনি গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার মৌখিক ভাবে স্টাফদের ২ মাসের মধ্যে কোয়ার্টার ছেড়ে যেতে বলে মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী।অসহায় কর্মচারীরা তার উদ্ভট সিদ্ধান্তর ফলে ক্ষুব্দ হয়ে মেয়রের সকল অনিয়ম দূর্ণীতির চাপা ফাইল সংশ্লিস্ট দপ্তরে প্রেরন করা হবে তবে কোয়াটার থেকে উচ্ছেদ করা হলে বলে জানিয়েছে একাধিক স্টাফ। কোটি কোটি টাকার দফারফায় জমিটি বিক্রির পায়তারা চালাচ্ছে মেয়র উন্নয়ন করবে এমন টা দেখিয়ে। আর কর্মচারীদের নেমে যাওয়ার কথা বলতে ক্ষুব্ধ হয়ে চাঁপা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সবাই। অপর দিকে অর্ধ বছর এক মাস বেতন বিহীন কাজ করে যাচ্ছে স্থায়ী সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর প্রায় ৩ মাস অস্থায়ী সকল শ্রমিকরাও পাচ্ছেনা তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরী। বিসিসি’র অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়ররা সম্পদ বৃদ্ধি করে আসলেও গোটা দেশের ন্যায় অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের মত শুধু মাত্র বরিশালেই তার ভিন্নতা দেখিয়ে দিচ্ছেন বর্তমান মেয়র সম্পদ বিক্রি করে নিঃস্ব করছে। এমন করে চলতে থাকলে তারা মনে করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নামটাই একদিন বিক্রি হয়ে যাবে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের পাল্লায় পরে মেয়রের সূক্ষ্ম বুদ্ধির মারপ্যাচে। এমতাবস্থায় বিসিসি’র স্থায়ী-অস্থায়ী সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে আজ কঠোর অবস্থানে গিয়ে কঠিন