মোঃবশির আহাম্মেদ : বরিশালে স্বাস্থ্যবিধির দোহাই দিয়ে বাসে যাত্রী ভাড়া দ্বিগুন আদায় করে নেয়া হলেও যাত্রী পরিবহনে পূর্বের চেহারা ও চালচিত্রই ফিরে এসেছে। বরিশালের আন্তুজেলা ১৩টি রুটে বাস যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে কোথাও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। একারনে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হলেও করোনাকালীন এসময়ে পকেট হাতিয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক পক্ষদের। সূত্রেমতে জানা গেছে, করোনাকালীন সংক্রমন রোধে একটি সিট ফাকা রেখে যাত্রী পরিবহন করতে হবে এমন নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারীভাবে। কিন্তু করেনার শুরুর দিকে লকডাউনসহ সকল প্রকার গণ পরিবহন বন্ধ রাখা হয় সংক্রমন ঠেকাতে। বরিশালের অভ্যন্তরীন রুট রুপাতলী থেকে পটুয়াখালী, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বরগুনা এবং নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনাল থেকে ভোলা, খুলনা, যশোর, ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। প্রতি ২৪ঘন্টায় আন্তজেলা রুটে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের রুটগুলোতে প্রতি ১ঘন্টা পরপর দুরপাল্লার পরিবহনগুলো চলাচল করে। কিন্তু কোন রুটেই পরিবহনেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়না কিন্তু যাত্রীদেরকে প্রায় দ্বিগুন ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এব্যাপারে রুপাতলীস্থ মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো: কাউসার হোসেন শিপন বলেন, করোনার এ সময়ে আমরা মালিক ও শ্রমিকরা চরম অনটনে রয়েছি। কিছুদিন হয়েছে যাত্রীরা বাসে নিয়মিত হচ্ছে। কিন্তু আপনাদের অভিযোগ অবাস্তব নয়। ব্যাপার হলো স্বাস্থ্যবিধি এমন একটি বিষয় যে যা উভয় পক্ষকেই মানতে হয়। অন্যথায় স্বাস্থ্যবিধির কোন সুফল এবং সংক্রমন ঠেকানো সম্ভব হয়না। এসময় তিনি আরো বলেন, আমরা বাস সিট খালি রেখেই টিকেট বিক্রি করি কিন্তু যাত্রীদের চাপচাপি আর অনুরোধের কারণে বাধ্য হতে হয় সকল সিট বিক্রি করার জন্য। শুধু তাই নয় গাড়িতে ওঠার পর কেউ মাস্কও ব্যবহার করেনা। গাড়ির স্টাফরা যাত্রীদেরকে মাস্ক ব্যবহার করতে বললে এতে হিতে বিপরীত হয়। কিন্তু সিট না হয় সব পুরন করে স্ট্যান্ড থেকে গন্তব্যে যাত্রা করা হয় কিন্তু পথিমধ্যে বাসের দাড় করিয়ে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন তো করেনার মধ্যেও থেমে নেই। অথচ যাত্রীদের থেকে দ্বিগুন ভাড়াও নেয়া হচ্ছে তাহলে এটাকে কিভাবে দেখছেন ? এনিয়ে তিনি বলেন, পথিমধ্যে আমাদের চেকপোস্ট থাকে। তাহলে এরপরও কিভাবে এই করোনাকালীন সময়ে এহনে কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে যাত্রী পরিবহন করা হয় জানতে চাইলে কোন সদুত্তর মেলেনি। এদিকে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের একাধিক সদস্য জানান, এতোদিন আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। এখন বাসে যাত্রী হওয়া শুরু করছে। এখনও যদি যাত্রী কম উঠাই তাহলেতো আমাদের দৈনিক হাজিরা, রোড খরচা ও মালিকের জমার টাকাও উঠবেনা। এরকম চলতে থাকলেতো এমনিই নাখেয়ে মরতে হবে। এ নিয়ে নথুল্লাবাদ পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ক্ষেত্রে শ্রমিকদেরকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কিন্তু লাইন ঠিক রাখতেতো নির্দিষ্ট স্টপিছেতো বাস থামতে হয় এবং যাত্রী ওঠা-নামা করাতে হয়। এরপর যাত্রীদের চাপেও সিট খালি রাখা যায়না। দেখা যায় জোড় করে যাত্রী উঠে যায় তখন ভদ্রতার খাতিরেও নামানো যায় না। আবার এমন সমস্যা যাত্রীরা দেখায় তখন মানবতার খাতিরেও যাত্রী বাস থেকে নামানো যায়না যেমন রোগী বা রোগী কিংবা জানাযা পরতে যাওয়ার ঘটনা থাকে। তবে বাস্তবতা হলো যাত্রীরা নিজেরা সতর্ক থাকলেই সবচেয়ে ভালো হয় তারাতো জানে যে সংক্রমন রোধে সরকার প্রতি ২টা সিটের একটা সিট খালি রেখে চলাচল করার নির্দেশনা দিয়েছে যেকারণে ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে বাসগুলোতে। এরপরও কেনো জোড় করে উঠতে হবে। আমরা জোড় করে নামিয়ে দিতে গেলে বাস কোম্পানির বদনামতো হয়ই এমনকি যাত্রীদের সাথে বাস স্টাফদের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতিও হয়। কিন্তু সিট ভরার পরও বাসে দাড় করিয়ে এবং গাদাগাদি করে যে যাত্রী পরিবহন করা হয় করোনাকালীন এসময়ে এবং যাত্রীদের থেকে ভাড়াও দ্বিগুন নেয়া হচ্ছে তাহলে এটা কি প্রতারণা নয় যাত্রীদের সাথে সে বিষয়টিতে আপানারা কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমরা চেক পোস্ট চালু করেছি কাউন্টারগুলোতে কিন্তু এরপরও তাহলে কিভাবে এই মহামারির মধ্যেও গাদাগাদি করে যাত্রী আনা-নেয়া করা হয় জানতে চাইলে এর কোন জবাব মেলেনি। অপরদিকে বরিশালের রুটগুলোতে যাত্রীদের থেকে দ্বিগুন ভাড়া নেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধিও লংঘন করা হচ্ছে তাহলে দুদিকেই ভোগান্তি যাত্রীদের থেকেই গেলো করোনাকালীন এসময়েও। এ নিয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, যাত্রী ও পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সকলকেই স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য অভিযান পরিচালিত হতে পারে। তবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে যদি সর্তক না হয় তাহলে প্রত্যেকেই সংক্রমিত হতে পারে এ বিষয়টি সকলকেই ধারণ করতে হবে। করোনার মধ্যে সাস্থ্যবিধি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে, আশা করছি মানুষ আরো সচেতন হবে নিজেদের ভালোর জন্য।
দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে স্বাস্থ্য বিধি না মেনে চলছেন বরিশালের বাস সার্ভিস
![](https://www.rockinrioacademy.com/wp-content/uploads/2020/08/117646580_974152583103274_1469753925718847307_n.jpg)