আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

পরিচয় জানা গেল সোশ্যাল মিডিয়া মাতানো নেপালি সবজিওয়ালির

পাকিস্তানের ইসলামাবাদের নীল চোখের চা-ওয়ালা আরশাদ খানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর কয়েকদিন ধরে ইন্টারনেট মেতেছিল নেপালি সবজিওয়ালিকে নিয়ে।

মেয়েটির দারুন সৌন্দর্য ও আপাত সরলতার প্রশংসা করে টুইটার ব্যবহারকারীরা তার ছবি ভাইরাল করলেও তার নামটি জানা ছিলনা কারো। বলা হচ্ছে, দূর থেকে ঐ মেয়েটির ছবি তুলেছিলেন এক পর্যটক।

অবশেষে জানা গেছে মেয়েটির পরিচয়। মেয়েটির নাম কুসুম শ্রেষ্ঠা, বয়স ১৮।
তখন পর্যন্ত অজ্ঞাত পরিচয় নেপালি এই মেয়েটি স্থানীয় এক বাজারে সবজি বিক্রি করছেন ও সবজি বহন করছেন – ইন্টারনেটে এমন ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
তার সবজি বহনের ছবি টুইটারে পোস্টের পর “মিট দ্য#নেপালি #তরকারিওয়ালি#এবং #সবজিওয়ালি নামে টুইটারে নেপালের সবজিওয়ালির ছবি ট্রেন্ডিং হিসেবে পোস্ট হতে থাকে।

মিস শ্রেষ্ঠার সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসির নেপালি সার্ভিস।
কুসুম শ্রেষ্ঠার পরিবার থাকে কাঠমুন্ডু থেকে প্রায় ৫৫ মাইল দূরে, গোর্খা এলাকার শহর বাগলিংয়ে।
বিবিসিকে মিস শ্রেষ্ঠা জানান, তিনি চিতওয়ান জেলার একটি কলেজে পড়েন এবং ছুটির দিনে পরিবারকে সাহায্যের জন্য তিনি সবজি বেচার কাজ করেন।

কলেজের ছুটিতে ওই সবজি বিক্রির কাজের সময় তার ছবিগুলো তোলা হয়েছিল।
যেসব ছবি ইন্টারনেট মাত করেছিল, তার একটি ছিল তিনি একটি ঝুড়িতে সবজি নিয়ে যাচ্ছেন – মুখে হাসি।
আরেকটি ছবিতে তিনি বাজারে সবজি বিক্রির সময় মোবাইলে কথা বলছেন।

কুসুম শ্রেষ্ঠা, নেপালি সেই সবজিওয়ালি যাকে নিয়ে ইন্টারনেট মেতেছে।
ফটোগ্রাফার রূপচন্দ্র মহারজান নেপালি একটি ব্লগসাইট, গুন্ডরুক পোস্টকে জানিয়েছেন গোর্খা এবং চিতওয়ানের মাঝামাঝি একটি ব্রিজ থেকে মিস শ্রেষ্ঠার ছবিগুলো তোলা হয়েছে।

মি: মহারজান যে কোম্পানির হয়ে কাজ করেন, সেই কোম্পানিটি স্থানীয় ত্রিশুলি নদীতে র‍্যাফটিংয়ের আয়োজন করে থাকে।
ইন্টারনেটে খ্যাতি পাওয়া এই তরুণী বিবিসিকে জানান যে ছবি ভাইরাল হওয়ার কাহিনী তিনি প্রথম তার এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারেন।
“আমার বন্ধু বললো, তুমি কি সেই মেয়ে যার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে? আমি তখনো কিছুই জানতাম না!”-বলেন মিস শ্রেষ্ঠা।

“তারপর ওই ছবিগুলো আমাকে পাঠানোর পর আমার মনে হলো আরে এগুলো তো আমারই ছবি। ওটা আমার সবজি বেচার দিন ছিল। রূপচন্দ্র আমার ছবি তুলেছিল, তবে তোলার সময় আমি জানতাম না যে সে ছবি তুলছে”।

ইন্টারনেটে এভাবে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় রীতিমতো অবাক হয়ে গেছেন কুসুম শ্রেষ্ঠা।
পাকিস্তানের চা-ওয়ালার মতো তিনিও যদি মডেলিংয়ের প্রস্তাব পান, তাহলে কি করবেন?
এমন প্রশ্নের উত্তরে কুসুম শ্রেষ্ঠ বলেন “হ্যাঁ, করবো।”

এই ছবি পোস্ট করে অনেকে মজা করে চা-ওয়ালা আর সবজিওয়ালির বিয়ে দিয়ে দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন!
কুসুম শ্রেষ্ঠার বাবা নারায়ণ শ্রেষ্ঠা নেপালের এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, তার মেয়ের ছবি ইন্টারনেটে জনপ্রিয় হওয়ার খবর তিনি শুনেছেন।
“আমার মেয়ের মতো লাজুক মেয়ে এমন পাবলিসিটি পাবে, তা কেউ ভাবতে পারেনি। সে খুব কম কথা বলে”-জানান মিস্টার শ্রেষ্ঠা।
কুসুম শ্রেষ্ঠা ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ছেন এবং পড়া শেষে তিনি নার্সের প্রশিক্ষণ নিতে চান। কুসুম শ্রেষ্ঠা নার্স হতে চায় বলে নিশ্চিত করলেন তাঁর বাবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.