বঞ্চিত বাঙালির অধিকারের কথা বলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্যাতিত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেছেন, একাত্তরের আগে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে বাঙালির কোনো অধিকার ছিলো না। বঙ্গবন্ধু সবসময় বাঙালির অধিকার আদায়ের কথা বলেছেন। সে কারণে তাকে নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এসময় সরকারি রেডিও-টেলিভিশন, রেলওয়ে, সশস্ত্র বাহিনীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেও বাঙালির বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে এবং বাঙালির অধিকারের কথা বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেজন্য তাকে সবসময় নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।
স্বাধীন রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেওয়ার পরও তিনি সবসময় ন্যায্য অধিকারের কথা বলেছেন। তার নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই স্বাধীন রাষ্ট্রে আমরা কাজ করতে পারছি। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন।
যুদ্ধজয়ের পর মাত্র তিন মাসের মধ্যে ভারতের সৈন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এমন নজির নেই। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শোকাভিভূত প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে হত্যা করতে ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যা করে।
যেসব আন্তর্জাতিক শক্তি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো, পরে তাদের ষড়যন্ত্রেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। আমার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা, আমার ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, ছোট্ট রাসেলকেও তারা হত্যা করেছিলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি একজন রক্ত দেয়, তবে একজন মানুষের জীবন বাঁচে। রক্ত দিলে শরীরের ক্ষতি হয় না। বরং ভালো। রক্ত দিলে শরীরে নতুন রক্তকণিকা উৎপন্ন হয়। শরীর সুস্থ থাকে। দেশে ফেরার পর ১৫ আগস্ট রক্ত দিতাম। যত দিন বয়স ছিল, ততদিন রক্ত দিতাম। ৫৭ বছরের পর নাকি রক্ত দেওয়া যায় না। তাই রক্ত নেয় না। দেওয়ার যদি ক্ষমতা থাকতো, তবে এখনও আমি রক্ত দিতে প্রস্তুত।
বঙ্গবন্ধু আমাদের রক্তের ঋণে আবদ্ধ করেছেন, লাখো শহীদ আমাদের রক্তের ঋণে আবদ্ধ করেছেন। তাদের এ রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিজয়ী জাতি, বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পর মাত্র নয় মাসের মধ্যে জাতির পিতা বাঙালিকে স্বাধীন দেশের সংবিধান উপহার দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে তিনি জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন।
বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন প্রজাতন্ত্রের জন্য যারা কাজ করেন তারা কর্মচারীরা নন, জনগণের সেবক। আমাদেরও সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।