আজ বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে বরিশাল নগরে বন্ধ হচ্ছে ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা। আপাতত মূল শহরের বাইরে চলাচল করতে পারবে। আদালতের নির্দেশে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আবু সালেহ মোঃ রায়হান। তিনি জানান, পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে সদর রোড এলাকায় কোন ধরনের ব্যাটারী চালিত অটো চলতে পারবে না। তবে শহরের আশপাশের সড়কে চলাচল করতে পারবে। নতুল্লাবাদ থেকে জেলখানার মোড় পর্যন্ত আবার রুপাতলী থেকে জিলা স্কুল মোড় পর্যন্ত আসতে পারবে অটোরিকশা।আবুল সালেহ আরো জানান, সামনে পবিত্র ঈদুল আযহা। তাই যাত্রীদের ভোগান্তী যাতে না হয় সেজন্য আপাতত লঞ্চঘাট এলাকায় অটো চলাচল নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না।
বরিশালের জিসানের প্রাইভেট কার ১ লিটারে চলবে ১৪৫ কিলোমিটার!
বরিশাল নগরীতে বৈধ-অবৈধ প্রায় সাড়ে চার হাজার ব্যাটারীচালিত অটোরিকশায় যানজটে দুর্ভোগের পাশাপাশি বেড়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিংও। এক হিসেবে দেখা গেছে প্রতিদিন সাড়ে ৪ হাজার অটোরিকশা দিনরাত মিলিয়ে ১১ ঘন্টা দু’টি ব্যাটারী চার্জে প্রায় ৯০ হাজার ইউনিট বিদ্যুত খরচ হয়। এতে করে নগরীর প্রায় ১৩ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাওয়া গেলেও অটোরিকশার কারণে প্রতিদিন লোডশেডিং হচ্ছে।
বরিশালকে নিয়ে উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী
যাত্রীদেও অনেকে বলছেন লোডশেডিং হলেও কম ভাড়ায় গন্তব্যে যাওয়ার সুবিধা দিয়েছে ব্যাটারীচালিত অটো।সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন পরবর্তী নগরবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে সিটি বাস চালু করা হয়। এর পরপরই চালূ হয় মাহেন্দ্র ও ব্যাটারীচালিত অটোরিকশা।
বরিশাল-পায়রা রেলপথ ব্রিটিশ কোম্পানিকে দিয়ে নির্মাণের নির্দেশ
পূর্বে যারা টেম্পো চালাতো তারা বর্তমানে ডিজেল চালিত মাহেন্দ্র টেম্পো চালাচ্ছে। কিন্তু অটোরিকশা চালাচ্ছে রিকশাচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার লোকজন। ১২ বছরের শিশুও অটোরিকশা হ্যান্ডেল ধরেছে। আর তার উপর নির্ভর করে চার জনেরস্থলে৬ জন যাত্রী একটি অটোরিকশায় উঠে গন্তব্যে যাচ্ছে। বিভিন্ন পেশার মানুষ অটোরিকশার চালক হওয়ায় তারা সড়কের কোন নিয়মকানুন না জানায় অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।সাবেক মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন ও বর্তমান মেয়র আহসান হাবীব কামালের আমলে সিটি কর্পোরেশন থেকে ২ হাজার ৬শ’অটোরিকশাকে লাইসেন্স দেয়া হলেও বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অটোরিকশা নগর দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
যে তিন প্রকল্পে বরিশাল হবে বাংলার ব্যাংকক!!!
আর এসব চালকের সড়কে যানবাহন চালানোর কোন অভিজ্ঞতা না থাকায় নগরীর প্রাণ কেন্দ্র সদর সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।একটি অটোরিকশার দু’টি ব্যাটারীতে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত এবং দুপুরে আবারো একটি ব্যাটারীতে ৩ ঘন্টা চার্জ দেয়া হয়। এতে একটি অটোরিকশার দুটি ব্যাটারীতে বিদ্যুত খরচ হয় প্রায় ২০ ইউনিট। সাড়ে চার হাজার অটোরিকশায় প্রতিদিন বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে ৯০ হাজার ইউনিট।এ অটোরিকশা যত পুরনো হচ্ছে বিদ্যুত ব্যবহার তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বর্তমানে লোডশেডিংও বৃদ্ধি পেয়েছে। বরিশাল নগরীতে দুটি ফিডাওে ৮০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পিকআওয়ারে ৯০ মেগাওয়াট এবং অফপিকআওয়ারে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় গ্রীড থেকে প্রতিদিন ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ বরিশাল গ্রীডে আসলেও অটোরিকশার কারণে বিদ্যুৎ বিভাগ লোডশেড দিতে বাধ্য হচ্ছে। বরিশাল পাওয়ার গ্রীড সূত্র জানায়, যে পরিমাণ বিদ্যুৎ অটোরিকশায় ব্যবহার হয় তা কমে গেলে বরিশাল নগরীতে কোন লোডশেডিং থাকবে না। আর লোডশেডিং এর কারণে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন থেকে উচ্চ আদালত ব্যাটারীচালিত অটোরিকশা তুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশ বাস্তবায়ন হলে নগরীতে লোডশেডিং থাকবে না বলে পাওয়ার গ্রীডের একাধিক কর্মকর্তার দাবি।