আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

বাকেরগঞ্জে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমিটির বৈধতা পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু।

মোঃবশির আহাম্মেদ : বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের স্মৃতি বিজারিত একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮৮ বছরের গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস বিনষ্ট করে অবৈধ ভোটার দিয়ে নির্বাচন করে বৈধতা পেতে বেপরোয়া দৌড়ঝাঁপ শুরু করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্রে জানা যায় বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নিজামুল কাদিরের বিরুদ্ধে ব্যপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয় টি খতিয়ে দেখতে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের বরাবর আবেদন করে। কতৃপক্ষ তদন্তে প্রথমিক ভাবে সত্যতা প্রমাণ পেয়ে শাস্তি হিসেবে তার এমপিও সুবিধা বন্ধ করে দেয়। এতে উক্ত প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে নানান ছলচাতুরীর আশ্রয় খুঁজতে শুরু করে। একই এলাকার বাসিন্দা ও ভাই প্রভাবশালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হবার সুবাদে জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী এমপি নাসরীন জাহান রত্না আমিনের কর্মী এডভোকেট মজিবুর রহমান কে, নীল নকশা তৈরি করতে শুরু করে। তারই অংশ হিসেবে সাবেক সভাপতি এম রহমানের ফাঁকা মাঠটি দখলে নিতে নানা কূটকৌশল অবলম্বন করে।
সে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সামনে তাদের সে কু- ইচ্ছে টি বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তারপর ও ক্ষমতা ও অর্থের বিনিময়ে প্রভাবশালী মুক্তি যোদ্ধা সংগঠক নাটু বাবুর পরিবারকে কি করে জনসম্মুখে প্রশ্নবৃদ্ধ করা যায় তা নিয়ে চলে নানা দুরভিসন্ধি, দীর্ঘদিন ধরে তাদের সে স্বরযন্ত্রের অংশ হিসেবে কমিটির সদস্যদের বিষয় তথ্য গোপন করে নির্বাচনী প্রহাসনের পথ প্রসস্থ করতে থাকেন।
বিষয় টি আচ করতে পেরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কতৃপক্ষের বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু অজানা কারণে তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত থাকেন। করোনা কালীন সময়ে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী সকল স্কুল, কলেজ বন্ধ অবস্থায় হঠাৎ করে কোনো প্রচারনা ছাড়াই সভাপতি নির্বাচনের ঘোষণা করলে তাদের তৈরী এজেন্ডা বাস্তবায়নে কোন। প্রতিপক্ষ এগিয়ে না আসলে, নাটুবাবুর স্ত্রী ছায়া রায় চৌধুরী তাকে চ্যালেন্স করে। প্রতিধন্ধিতায় অংশ নেন। এতে এলাকায় তার সৎ নিষ্ঠা ও জনপ্রিয়তায় ভীতু হয়ে পুনরায় চলতে থাকে দুরভিসন্ধিমূলক তৎপরতা, এরই অংশ হিসেবে বিদ্যালয়ের নামকরণ পরিবর্তনের ধুঁয়া তুলে কয়দিন ধরে গনমধ্যমে তার ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি সহ নানান ছলচাতুরী ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নেন।
এ থেকে রেহাই পায়নি ২৯ বছর ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করা তার ছেলে বিপ্লব বহ্নি রায় চৌধুরী প্রর্যন্ত। উক্ত নির্বাচনে ১০ জন ভোটারের ৪ জন অভিভাবক সদস্য, ৩ জন শিক্ষক, ২ জন দাতা,১ জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এদের মধ্যে ৯ জন ভোটার উপস্থিত থেকে তাদের ভোট অধিকার প্রয়োগ করেন। এতে ৫ ভোট পেয়েছেন এডভোকেট মজিবর রহমান ৪ ভোট পান ছায়া রায় চৌধুরী। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে তাদের ৫ ভোটের ২ ভোট বাতিল বলে গন্য হবে। কারণ আঃকুদ্দুস নামের একজন ভোটার তার নাতিকে ছেলে পরিচয় দেখিয়ে তথ্য গোপন করে সাবেক প্রধান শিক্ষক অভিভাবক সদস্য বানিয়েছে যা বর্তমান প্রধান শিক্ষক বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। (২)অন্য একজন ভোটার কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম বজলুর রহমানকে সাবেক প্রধান শিক্ষক তথ্য গোপন করে তাকে অভিভাবক সদস্য বানিয়েছে যা সম্পুর্ন নীতিমালা পরিপন্থী। কারণ ২০১৪ সনের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালকের স্বাক্ষরিত পরিপত্রে স্পষ্ট লেখা আছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন প্রধান/সহকারী শিক্ষক অন্যকোনো বিদ্যালয়ের সদস্য / সভাপতি হতে পারবেনা। কারণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি জনিত চাকরি এবং নিজ চাকরি স্থলে অনেক কাজ থাকে বিধায় সরকারি নীতিমালা পরিপন্থী। সুতরাং উল্লেখিত দুটো ভোট বাতিল হবে এবং এই কমিটি শিক্ষা বোর্ড অনুমোদন দিবেনা বা দিতে পারেনা। তা সত্বেও উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার এনামুল হক থানার ইনপেক্টর অপারেশন মোঃ মমিন উদ্দিনের সহায়তায় নির্বাচন অনুষ্ঠান পরিচালনা করে তড়িঘড়ি সভাপতির নাম ঘোষণা করলে এলাকার সচেতন মানুষের মনে নানান প্রশ্নর সৃষ্টি হয়। তারা বিস্ময় প্রকাশ করে এমন নেক্কার জনক ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এ বিষয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন সিকদারের মুখোমুখি হলে তিনি জানান নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় ওরা কেউ আমাকে জানায়নি। এ বিষয় আমি কিছু জানতাম না। আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রিয় পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি ক্ষমতায় থাকতে এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারপরও কমিটি অনুমোদনের জন্য বোর্ডের উপর বিভিন্ন রকমের চাপ প্রয়োগ করে নির্বাচনের বিষয়টি তদন্ত অবস্থায় থাকার মধ্যে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিদর্শককে একাধিকবার ফোন দিয়ে কমিটি অনুমোদনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতেছে। তারা আইন কানুন নিয়ম নীতি কোনো কিছুই পরোয়া করেনা। প্রার্থী নিজে এডভোকেট দাবি করলেও সে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বিধিবহির্ভূত ভাবে মিটিং করতে চাপ প্রয়োগ করে বোর্ড কতৃপক্ষকে সে কথায় কথায় বর্তমান সরকারের মহাজোটের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে হুমকি-ধমকি দেন। অথচ আইনগত ভাবে এই কমিটি কোনভাবেই অনুমোদন দেয়া সম্ভব নয় বা অননুমোদিত কমিটি দিয়ে মিটিং করা সম্পুর্ন বে আইনি। সাবেক প্রধান শিক্ষক নিজামুল কাদিরের একদিকে এমপিও বন্ধ, অন্যদিকে আগের কমিটি মিটিং ডেকে রেজুলেশন করে তাকে সমস্ত দায়-দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। তারপর ও সে বর্তমান প্রধান শিক্ষককে লাইব্রেরীর তালাচাবি বুঝিয়ে দিচ্ছেনা।বরং প্রতিদিন লাইব্রেরী খুলে সন্ধার পরে অফিসে বসে,এমন অভিযোগও রয়েছ। যদিও কমিটি তাকে সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। সর্বশেষ উপায়ন্তর না পেয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লাইব্রেরীতে নতুন তালা লাগাতে বাধ্য হয়। কারন লাইব্রেরী থেকে মূল্যবান কাগজঅত্র গায়েব হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের চক্রান্ত থেমে নেই। এমন নোংরা পরিস্থিতিতে স্থানীয় সাধারণ মানুষ সরকারের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.