সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে বাঙালী শব্দের আগে ‘দুষ্কৃতিকারী’ শব্দ ব্যবহার করায় গাইবান্ধার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১২ ডিসেম্বর তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ওই শব্দ প্রয়োগের বাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ চিনিকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষের ঘটনায় জারি করা এক রুলের শুনানিকালে মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
আদালত বলেন, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক বাঙালীদের দুষ্কৃতকারী বলেছেন। একাত্তরের আগে এটা মানা যেত। সবকিছুর একটা সীমা থাকা উচিত। এরপর আদালত গাইবান্ধার ডিসিকে তলব করেন।
আদালতে সাঁওতালদের নিয়ে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে এড আই খান পান্না ও এ এম আমিনউদ্দিন।
চিনিকল কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম এ মাসুম ও ব্যারিস্টার দীপা।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু সাংবাদিকদের বলেন, সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায় ৩০ নভেম্বর গাইবান্ধার জেলা প্রশাসকের পক্ষে থেকে হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনের এক জায়গায় লেখা হয়েছে, ‘সাঁওতাল ও কিছু বাঙালী দুষ্কৃতকারী চিনিকলে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে’।
একইসঙ্গে সাঁওতালদের অবাধে চলাফেরার অধিকার নিশ্চিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় ক’টি মামলা হয়েছে, কারা কারা আসামি রয়েছেন সে বিষয়ে ৩০ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিলে গাইবান্ধার এসপি ও ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে রুলও জারি করেন আদালত। যাতে সাঁওতালদের জীবন-মান সম্পত্তি রক্ষায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চান হাইকোর্ট। সেই অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা প্রতিবেদন দাখিল করে।
গত ১৬ নভেম্বর আইন ও সালিস কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করা হয়।