আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

মশার কয়েল বেশি ক্ষতিকারক ধূমপানের চেয়ে

বদ্ধ ঘরে মশার কয়েল জ্বালানো আর প্রায় ১০০টি সিগরেট খাওয়া- দুই-ই সমান! সিগরেটে ফুসফুসের ক্যান্সার হয়, সে ভাবেই মশার কয়েল এবং ঠাকুরঘরে সুগন্ধী ধূপকাঠি জ্বালালেও কর্কট রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।

চেস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর সন্দীপ সালভি জানিয়েছেন, মশার কয়েল এবং ধূপকাঠি শুধু ফুসফুসের জন্যই ক্ষতিকর নয় বরং এর জেরে ক্যান্সারও হতে পারে।

জেএসএস কলেজে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান কলেজ অফ অ্যালার্জি, অ্যাস্থমা অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড ইমিউনোলজির ৪৮তম ন্যাশনাল কনফারেন্সে উপস্থিত চিকিৎসক সালভির দাবি, ফাউন্ডেশনের গবেষনায় জানা গেছে, মশারকয়েল এবং সুগন্ধী ধূপকাঠিতে কার্সিনোজেন থাকে।

তাইওয়ান এবং চিনে এ সংক্রান্ত গবেষণায় প্রমাণিত, ফুসফুসের ক্যান্সারের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে। চিকিৎসক সালভি জানিয়েছেন, বদ্ধঘরে একটি মশার ধূপ জ্বালানো প্রায় ১০০টি সিগরেট খাওয়ার সমান।

গবেষণায় জানা গেছে, এই ধূপকাঠিগুলি টক্সিক, কারণ এতে সিসে, লোহা এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকে। তিনি বলেন, মশার ধূপে ‘পাইরেথ্রিন’ নামে একটি কীটনাশক থাকে, যা ফুসফুসের পক্ষে ক্ষতিকর। তবে ধোঁয়া-বিহীন মশার ধূপের ওই উপাদানগুলো কম থাকলেও, সেগুলো থেকে বিশাল পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড নির্গত হয়। এটিও ফুসফুসের পক্ষে ক্ষতিকর।

প্রশ্ন উঠতেই পারে, মশা রিপেলেন্ট ম্যাট এবং লিকুইডেটরগুলো কি নিরাপদ? যদিও এই দুইয়ের ওপর এখনো গবেষণা হয়নি, তা-ও সালভি জানিয়েছেন, এই গ্যাসিয়াস পলিউশন ফুসফুসে তীব্র জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে।

সন্দীপ সালভি জানিয়েছেন, পুনের ২২টি গ্রামে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ৬৫ শতাংশ গৃহস্থই মশার ধূপ জ্বালানোর সময় দরজা-জানালা বন্ধ করে দেন। যা ওই টক্সিক গ্যাসের প্রভাবকে আরো জোরাল করে দেয়।

জেএসএস মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক, পি এ মহেশ জানিয়েছেন, সম্প্রতি মশার ধূপ এবং ধূপকাঠির কার্সিনোজেনিক উপাদান নিয়ে গবেষণা হয়েছে। যে স্থানের তাপমাত্রা বেশি, যেমন- ভারত এবং চিন সেখানেই মশার উপদ্রব দেখা যায়। তাই ইওরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো শীতল স্থানে এ সংক্রান্ত কোনও গবেষণা হয়নি।

চিকিৎসক পি এ মহেশের পরামর্শ, ডেঙ্গি, চিকেনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো ভেক্টর-বোর্ন রোগের হাত তেকে বাঁচতে দরজা এবং জানালায় মশার-নেট লাগানো উচিত এবং বিছানায় মশারি খাটিয়ে ঘুমনো উচিত।

তিনি বলেন, “মশার রিপেলেন্টগুলিতে ফর্মালডিহাইড এবং ভোলাটাইল অর্গ্যানিক কম্পাউন্ড থাকে। মশার রিপেলেন্ট ব্যবহারের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের সামনে একটি প্রস্তাব পেশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন পি এ মহেশ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.