আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

মির্জা ফখরুল :জিয়ার স্বাধীনতা পদক ফেরতের পদক্ষেপ আত্মঘাতী

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের জন্য মন্ত্রিসভা কমিটির পদক্ষেপকে সঙ্কীর্ণ মানসিকতা, আত্মঘাতী এবং নোংরা কাজ বলে অভিহিত করেছে বিএনপি।

আজ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পত্রিকায় আজ একটি সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার হচ্ছে। এই সংবাদে আমরা এবং গোটা জাতি বিস্মিত, এবং উদ্বিগ্ন হয়েছি।

তিনি বলেন, যিনি পদক প্রবর্তন করলেন তিনি বাদ, কিন্তু পদক থাকবে, তার কীর্তিও থাকবে। এটা যে কত বড় সঙ্কীর্ণতা, আত্মঘাতী এবং নোংরা কাজ, তা আওয়ামী লীগ যেদিন বুঝবে সেদিন আর শোধরানোর সময় থাকবে না।

আজ বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, আহমদ আযম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের দলীয় মূল্যায়ণ আমরা সবাই জানি। কিন্তু দলীয় মুল্যায়নে রাষ্ট্র চলে না, রাষ্ট্র সবার। এই রাষ্ট্রকে যদি দলীয় বানাতে চান তখন রাষ্ট্র থাকবে দলই থাকবে না।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু ইতিহাসে নয়, বহু মানুষের হৃদয়ে আছেন পরম শ্রদ্ধায়। কাজেই তিনি স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবেনই। যারা গায়ের জোরে নোংরাভাবে তাকে মুছতে চাইছেন, তাতে তিনি ফিরলে হয়তো একইভাবে তারাও মুছে যেতে পারেন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৩ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দিয়েছিলো জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা ছিলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরম ঔদার্যের এক উজ্জল দৃষ্টান্ত। এই সম্মাননা বিতর্কিত এবং অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীসভার কমিটিতে বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটি কথা স্পষ্ট করে করে বলতে চাই- বর্তমান আওয়ামী লীগ যে রাজনীতি করছে, তা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। হতাশা এবং দুর্ভাগ্যের সাথে লক্ষ করছি, এই সরকার ঐক্যের রাজনীতিকে বিসর্জন দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে গোটা জাতিকে বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে বিভক্ত করে ফেলছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সামরিক ক্ষেত্রে শৌর্যবীর্য ছাড়া আর কোনো ক্ষেত্রে মেধা, কৃতিত্ব যোগ্যতা ও নেতৃত্বের স্বীকৃত হিসেবে দেশি-বিদেশি কাউকেই কোনো রাষ্ট্রীয় খেতাব, পদক ও ভুষণে বিভুষিত করাকে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলো। একাডেমিক অনার ছাড়া বিদেশ থেকে কোনো সম্মাননা অর্জনকেও রাষ্ট্রপ্রতির প্রাক অনুমোদন গ্রহণ করার শর্ত যুক্ত করেছিল তারা। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় সম্মামনার ওপর আরোপিত সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। ১৯৭৭ সালে দেশে প্রথম স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক প্রবর্তন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ যারা বিভিন্নক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাদের পদক প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশকে চরম সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। একদিকে গণতন্ত্র ও অন্যদিকে জঙ্গিবাদের সঙ্কট। এই সঙ্কট থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি মাত্র পথ হচ্ছে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসা।

সরকারকে ভয়াবহ পথ থেকে সরে এসে জনগণের আকাঙ্খা পুরণ করার জন্য গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যথায় কোনোদিনই জাতি আপনাদের ক্ষমা করবেনা এবং ভবিষ্যতে এর জবাব দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.