এম.জামাল হোসেন : নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাকে করা হচ্ছে তা নিয়ে সারা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন বেশ গরম। সার্চ কমিটি এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে।কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগে বিদায় নেবেন। এ পর্যায়ে নতুন সিইসি নিয়োগ করা হতে পারে আলোচিত আমলা মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্র যমুনা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হতে পারেন।
সূত্র জানায়, মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা অনেক কর্মদক্ষ ব্যাক্তি। এখন পর্যদন্ত সিইসি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন। তবে রাষ্ট্রপতি এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তার আগে এ বিষয়ে সার্চ কমিটির ভূমিকাও রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হতে যাচ্ছেন। এবং বর্তমান পাঁচ কমিশনারের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী নতুন কমিশনার হিসেবে পুনঃর্নিয়োগ পাবেন।
গত বুধবার সার্চ কমিটি গঠিত হওয়ার পর ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আশা করা হচ্ছে, যাতে প্রথমবারের মতো একজন নারীও অন্তর্ভুক্ত হবেন।
নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির; সংবিধানে বলা আছে, একটি আইনের অধীনে তিনি এই নিয়োগ দেবেন।
তবে চার যুগেও ওই আইনটি হয়নি। গেল বার রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে একটি সার্চ কমিটি গঠন করেন। তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়া হয় ইসি কমিশনকে।
সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন ঠিক করে দেয় না, তারা রাষ্ট্রপতিকে সহায়তা করতে কিছু নাম বাছাই করে দেবে। রাষ্ট্রপতি তা থেকে নিয়োগ দেবেন।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও একই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। তবে গতবারের চার সদস্যের সার্চ কমিটির পরিবর্তে এবার ছয় সদস্যের কমিটি করেছেন তিনি।
সার্চ কমিটির সদস্যরা হলেন, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, পিএসসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, শিরীণ আখতার ও সিএজি মাসুদ আহমেদ।
গতবার সার্চ কমিটিতেও প্রধান ছিলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। গতবারও হাই কোর্টের একজন বিচারক এবং পিএসপি চেয়ারম্যান ও সিএজি পদধারীরা কমিটিতে ছিলেন।
২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি সার্চ কমিটি গঠনের পর ৭ ফেব্রুয়ারি ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেয়া হয়। তার মধ্য থেকে ৫ জনকে ৮ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।
গতবার সার্চ কমিটি গঠনের পরপরই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার মনোনয়নের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচটি নাম পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছিল।
সেই সঙ্গে সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সব মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্যসচিবের নামের তালিকাও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে চেয়েছিল সার্চ কমিটি।
সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব কাজী রকিবউদ্দীনের নাম প্রস্তাব করেছিল।
পাশাপাশি গতবার চার জন কমিশনার হিসেবে একজন নারীসহ আটটি নাম সুপারিশ করা হয়। তারা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু হাফিজ ও শাহ মো. মনসুরুল হক, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব আবদুল মোবারক, সাবেক পুলিশপ্রধান হাদিস উদ্দিন আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাবেদ আলী, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক নিবন্ধক ফজলুল করিম, সাবেক দায়রা জজ মো. শাহনেওয়াজ এবং এনজিও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন মুরশিদ।
তার মধ্য থেকে কাজী রকিবকে সিইসি এবং আবু হাফিজ, আবদুল মোবারক, জাবেদ আলী, মো. শাহনেওয়াজ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, পাঁচ বছর আগে সিইসি কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ ও তিন নির্বাচন কমিশনার ৯ ফেব্রুয়ারি এবং আরেকজন নির্বাচন কমিশনার ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যোগ দিয়েছিলেন।সেক্ষেত্রে বর্তমান কমিশনের মেয়াদ ৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ণ হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
স্বাধীনতার পর ১১ জন সিইসি ও ১৯ জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পেয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন সিইসি মেয়াদ পূর্ণ করেছেন। সামরিক শাসনে বিচারপতি এ কে এম নুরুল ইসলাম সাড়ে সাত বছর ছিলেন এই পদে।
– See more at: http://jamunanews24.com/jbn/index.php/show/news/990/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A7%9F/january-29-2017-19:15/%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AB-%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8-%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%81%E0%A6%87%E0%A6%9E%E0%A6%BE-%E0%A6%B9%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%BF!#sthash.O9MdpWAw.dpuf