আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

লাভ কি ? সড়ক ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযানে।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাংলামটরে অটোমোবাইল ব্যবসায়ীদের দখলে থাকা সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে আজ একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু ঢাকায় এ ধরনের অভিযান প্রায়শই চালানো হয় এবং অভিযানের পর আবার দখল হয় ফুটপাত কিংবা সড়ক। কেন এ অভিযানগুলো শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় ? কেন সত্যিকার অর্থেই দখল মুক্ত করা সম্ভব হয়না নগরীর সড়ক কিংবা ফুটপাতগুলো ?

ঢাকার বাংলামটর থেকে ইস্কাটন যাওয়ার সড়কটির অধিকাংশ জায়গাতেই অটোমোবাইলের দোকান, যারা যানবাহন সারানো বা যন্ত্রাংশ সংযোজনের কাজটি করে ফুটপাতে কিংবা ফুটপাত সংলগ্ন সড়কে। আজ সেখানেই অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে অভিযানের সূচনা হয়েছে একটি ছোট দোকান উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে, যে দোকানটির দশ গজের মধ্যেই মূল সড়কের ওপরেই দাড়িয়ে আছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি, সেটি অবশ্য অক্ষতই থেকে গেছে।

ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল টীম যখন ফুটপাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলো ততক্ষণে ফুটপাতের বাকী অংশ অনেকটাই পরিষ্কার করে রাখেন দোকানগুলোর কর্মচারীরা।
ম্যাজিস্ট্রেট সরে যাওয়ার পর একজন ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে পুলিশ চলে গেলে তিনি আবার ফুটপাত দখল করবেন কি-না ।
জবাবে তিনি বলেন, ” গাড়ীর কাজ যদি না করতে পারি তাহলে ব্যবসা করা সম্ভব হবেনা। ট্যাক্স দোকান ভাড়া কিংবা স্টাফ খরচ আছে। আমাদের জায়গা কম তাই এভাবেই কাজ করতে হবে”।
আরেকজন ব্যবসায়ী ফুটপাত দখলের জন্য সরাসরি দোষ চাপালেন যারা যানবাহনের কাজ করাতে আসেন তাদের ওপর।

উচ্ছেদ অভিযানের পর ঢাকার বাংলামটরের একটি ফুটপাতের দৃশ্য। সাধারণত এসব ফুটপাত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্যে ভরা থাকে।
তাহলে এ ধরনের অভিযান চালিয়ে লাভ কি হয়?

এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মশিউর রহমান সবাই মিলে মনিটরিং করতে হবে এবং শুধু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে সম্ভব নয়।
নগর ও পরিবেশ নিয়ে আন্দোলনকারীদের একজন স্থপতি ইকবাল হাবিব বলছেন দখল মুক্ত করতে হুট করে চালানো উচ্ছেদ অভিযানগুলো একেবারেই মূল্যহীন বরং তার মতে এগুলো দুর্নীতির আরও ক্ষেত্র তৈরি করে।

তিনি বলেন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা না হলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।
মিস্টার হাবিব বলেন রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোকে সম্পৃক্ত করে রাস্তাঘাট ফুটপাত দখল মুক্ত করে পরেও তা রক্ষা করা যে সম্ভব তার প্রমাণ হলো ঢাকার তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড এবং গাবতলী বাস টার্মিনাল। অবশ্য এর ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে গুলিস্তানে। সেখানে একটি ব্যস্ততম সড়ক কয়েক দফায় চেষ্টা করেও দখল মুক্ত করতে পারেনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। তাই শেষ পর্যন্ত নগরীর সব সড়ক ও ফুটপাত কবে সম্পূর্ণ দখল মুক্ত হবে কিংবা আদৌ হবে কি-না সেটি বলা সত্যিই কঠিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.