আজ : ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি

স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন হাসপাতালে। কিন্তু ৫০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে স্ত্রীর দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ি দেয় নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই পাশে ১২ বছর বয়সী মেয়ে আর কাঁধে স্ত্রীর চাদর মোড়া মৃতদেহ নিয়ে হেঁটেই গ্রামে ফিরছিলেন দানা মাঝি।
ভারতের সবথেকে পিছিয়ে পড়া এবং দরিদ্রতম জেলাগুলির একটা – ওড়িশার কালাহান্ডির বাসিন্দা মি. মাঝি।
দশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তাঁর গ্রাম আরও ৫০ কিলোমিটার দূরে।
এমন সময়ে স্থানীয় একটি টি ভি চ্যানেলের সাংবাদিকরা দেখতে পান মৃতদেহ কাঁধে এক ব্যক্তি হেঁটে যাচ্ছেন, পাশে একটি বাচ্চা মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছে।
ওই সাংবাদিকদের কাছ থেকেই গোটা ঘটনা জানা গেছে।
ওড়িশার সংবাদমাধ্যম তো বটেই, ভারতের জাতীয় গণমাধ্যমগুলিও এই মর্মান্তি ঘটনার খবর দিয়েছে বৃহস্পতিবার সকালে।

মি. মাঝিকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, তাঁর স্ত্রী বুধবার সকালে যক্ষায় মারা যান ভবানীপাটনা শহরের একটি সরকারী হাসপাতালে।
মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো ওড়িশাতেও একটি সরকারী প্রকল্প রয়েছে ‘মহাপ্রয়ান’ নামে।
ফেব্রুয়ারী মাসে চালু হওয়া ওই প্রকল্পের জন্য ৪০টি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু মি. মাঝির অভিযোগ জেলা হাসপাতাল তাঁর মৃত স্ত্রীর জন্য কোনও গাড়ি দিতে অস্বীকার করে।
“হাসপাতালে সবাইকে অনুরোধ করেছিলাম স্ত্রীর দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে। কেউ সাহায্য করে নি। উপায় না দেখে কাঁধে স্ত্রীর দেহ নিয়ে মেয়েকে সঙ্গে করে হেঁটেই গ্রামে ফিরছিলাম,” জানিয়েছেন দানা মাঝি।
সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা মি. মাঝির কথা শুনে ফোন করেন জেলা শাসককে। আর্জি জানান সাহায্য পাঠানোর জন্য। জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে গাড়ি আসে। বাকি ৫০ কিলোমিটার রাস্তা সেই গাড়িতে চেপেই স্ত্রীর দেহ আর ছোট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন দানা মাঝি। সৎকারের জন্য দেওয়া হয়েছে সরকারী সাহায্যও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.