বরিশাল : গত এক মাসে নিষ্পত্তি করা গেছে মাত্র একটি মামলা। ফলে আটকে আছে সরকারী প্রায় দেড় কোটি টাকা। বিবাদীদের সঠিক ঠিকানা না থাকায়, ছাড়পত্র দাখিলে বিলম্ব ও বিবাদীদের মধ্যে অনেক মৃত্যুর কারণে ঝুলে আছে মামলাগুলো। ফলে এ মামলাগুলোর নিষ্পত্তি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে প্রশাসন। বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিচারাধীন ৩শ মামলা অগ্রনী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, আয়কর, পল্লী বিদ্যুত, বনবিভাগ, কাষ্টমস, ভুমি হুকুম দখল শাখা, জনশক্তি দপ্তর বাদী হয়ে দায়ের করেছে। এসব মামলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করেছে আয়কর দপ্তর। একশ’ মামলা করেছে তারা। তাদের মোট অনাদায়ী টাকার পরিমান ৬৬ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৩ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কাস্টমস দপ্তর। এ দপ্তরের মামলার সংখ্যা ৮১টি। দপ্তরের ২৯ লাখ ১১ হাজার ৩৫ টাকা অনাদায়ে এই মামলা করা হয়েছে। এরপরের স্থানে রয়েছে পল্লী বিদ্যুত বিভাগ। তারা করেছে ৬২ মামলা। অনাদায়ী টাকার পরিমান ৩ লাখ ৪ হাজার ৫৬ টাকা। এছাড়া অগ্রনী ব্যাংক ৭ লাখ ২১ হাজার ৭১ টাকার জন্য ২৫ টি মামলা, জনতা ব্যাংক ২ লাখ ৮৩ হাজার ২৫৬ টাকার জন্য ৮ টি মামলা, কৃষি ব্যাংক ৮৪ হাজার ৩৪৩ টাকার জন্য ৩টি মামলা, একই সংখ্যক মামলা করেছে সোনালী ব্যাংকও। তাদের অনাদায়ী ৩ লাখ ১ হাজার ৯৩৫ টাকা। অপরদিকে ১ লাখ ৫ হাজার ৯০৫ টাকার জন্য বনবিভাগ করেছে ৪টি, ৯ লাখ ১০ হাজার ৫শ’ টাকার জন্য ভুমি হুকুম দখল শাখা করেছে দুইটি মামলা। জনশক্তি দপ্তরের করা দুইটি মামলার অনাদায়ী টাকার পরিমান ৪৩ হাজার ৫৭৩ টাকা। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৫১৯ টাকা অনাদায়ের জন্য ১০টি মামলা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, জেনারেল সার্টিফেকেট অফিসার দুই তিন মাস পর পর পরির্বতন হয়। যার কারণে যে সময় যারাই দায়িত্ব পালন করেন তারা এ বিষয়ে তেমন একটা সময় দেয় না। এমনকি চাপ প্রয়োগ করে সরকারী প্রায় দেড় কোটি টাকা আদায় ও মামলা নিষ্পত্তিতেও মনোযোগ দেন না। যার কারণে দিনে দিনে মামলা জমছে আর নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এমনকি উপজেলা প্রশাসনকেও পাচ না দেয়ায় তারা সুপারভিশন করছেন না। ফলে এ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসার ও নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার জানান, ছাড়াপত্র দাখিল না করার কারণে মামলা নিস্পত্তিতে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া বিবাদীর সঠিক ঠিকানা না থাকার কারণেও বিলম্ব হয়। তবে এখন থেকে নতুন এক পদ্দতিতে তারা মামলা নিষ্পত্তিতে যাচ্ছেন। যার কারণে নভেম্বর মাসেই ১৫টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। তবে নতুন করে দায়ের হয়েছে আরো ৮টি মামলা।
এব্যাপারে বরিশাল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) আহসান হাবিব জানান, গত মিটিং এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এর আগে এ বিষয়েটি মনিটরিং এর অভাবে স্থবির ছিল। উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিবাদীদের লাল নোটিশ ও পুলিশের মাধ্যমে নোটিশ দেয়ার জন্য। এতে করে ভাল ফল আসবে বলে তিনি মনে করেন। এছাড়া যেখানে বিবাদী মারা গেছে সেখানে জটিলতার সৃস্টি হয়েছে। আহসান হাবিব বলেন, মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি ও সরকারী টাকা অবশ্যই আদায় করা হবে।