আজ : ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News

র‌্যাবের তালিকার নিখোঁজ রহমতুল্লাহর সন্ধান

রাজশাহী: ঘরছাড়া নিখোঁজ ২৬১ ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছে র‌্যাব। এরমধ্যে রাজশাহী থেকে নিখোঁজ আছে তিনজন। এ তিনজনের মধ্যে নিখোঁজ তালিকার ২১৫ নম্বরে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রহমতুল্লাহ রাজশাহীর কারাগারে রয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা।

অপরদিকে, নিখোঁজ তালিকার ১০৫ নম্বরে থাকা আশিক একজন নির্মাণ শ্রমিক। তার বাড়ি চারঘাটের টাঙ্গন দাঁইড়পাড়া গ্রামে। ফেনীতে কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। তার বয়স ১৫ বছর।

আশিকের বাবার নাম তালিকায় জিল্লুর রহমান হিসেবে উল্লেখ আছে। তিনি শ্রমিকদের সরদার। আশিক নিখোঁজ হওয়ার পরেই তার বাবা থানায় জিডি করেছিলেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশিকের বাবার নাম বাবর আলী।

আশিকের বাবা জানান, তার ছেলে লেখাপড়া জানে না। ভাতের জন্য তাকে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে হয়েছিলো। ভগ্নিপতি বাদল আলী ওরফে শুকারের সঙ্গে ছেলেকে ফেনীতে কাজে পাঠিয়ে ছিলেন। গত ১ মার্চ সিগারেট কিনতে যাওয়ার কথা বলে নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। স্থানীয় লোক বাজারের দিকে তাকে যেতে দেখেছিল। পরে আর তাকে পাওয়া যায়নি।

আশিক নিখোঁজের এক মাস পর থানায় জিডি করা হয়। নিখোঁজের প্রায় একমাস পর চলতি বছর ৪ এপ্রিল থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা। তবে তালিকায় উল্লেখ করা জিল্লুর রহমানের বাড়িও চারঘাট উপজেলার গোপালপুর গাংপাড়া গ্রামে।

চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন জানান, র‌্যাবের তালিকায় নিখোঁজ আশিকের ব্যাপারে এখনো তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।

অপর নিখোঁজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ। নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজলোর মাগুরা গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।

রহমতুল্লাহের বিষয়ে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল সাদিক জানান, গত এপ্রিলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের পর ১৭ মে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রহমতুল্লাহকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। অধ্যাপক রেজাউল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্বেও আছেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল সাদিক।

তবে, ১৪ মে রাতে নগরীর মতিহার থানায় রহমতুল্লাহর নিখোঁজ হওয়ার তথ্য জানিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল আলম।

ওই জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৩ মে সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ এক স্বজনকে দেখতে যাওয়ার কথা বলে হল থেকে বের হয়ে যান রহমতুল্লাহ। রাতে তিনি আর হলে ফেরেননি। এর পর থেকে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ।

১৭ মে শিক্ষক রেজাউল হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতি জানাতে গিয়ে তৎকালীন মহানগর পুলিশ কমিশনার শামসুদ্দিন এই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান। এছাড়াও ওই তালিকায় থাকা অপর নিখোঁজ হলো, তানোরের মোহাম্মদ বাসারুজ্জামান ওরফে আবুল বাশার। র‌্যাবের তালিকায় নং ২৫৯।

পুলিশ ও পরিবারের তথ্য অনুযায়ী, বাড়ি ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর জানতে পারা যায় যে, মোহাম্মদ বাসারুজ্জামান ওরফে আবুল বাশার নিখোঁজ আছেন। বাশার তানোরের লালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজ উদ্দিনের ছেলে।

ঢাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডি শাখা থেকে লেখাপড়া করার পরে বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন বাশার। সেখানেই বিয়ে। সেই সূত্রে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ঢাকা তেজগাঁওয়ে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে থাকতো বাশার। গত ৬ থেকে ৭ মাস আগে তেজগাঁওয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে বাশার নিখোঁজ হন।

তানোর উপজেলার লালপুর গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তি ও লালপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজ উদ্দীনের ছেলে বাশার দুই ভাই এক বোনের মধ্যে বড়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comment moderation is enabled. Your comment may take some time to appear.