ঢাকা: দেশের প্রতিটি মসজিদে শুক্রবারের খুতবা নির্ধারণ করে দেয়ার পরিকল্পনা করছে মিশর সরকার। এ বিষয়ে গত সপ্তাহে তারা শুরু করেছে একটি প্রচারাভিযান। সিসি সরকারের পরিকল্পনা অনুসারে, সারা মিশরের ৮ কোটি মুসলিমের জন্য একটি খুতবার বই নির্ধারণ করে দেবে তারা।
এ নিয়ে মিশরে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দাবি, মুসল্লিরা যাতে কোনো ধরনের চরমপন্থা দ্বারা প্রভাবিত না হয় সে উদ্দেশ্যেই এই পরিকল্পনা তাদের। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ইমামদের একমত হতে মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে আবেদন জানানো হয়েছে। ১৫ জুলাই রাজধানী কায়রোর আমর বিন আল আস মসজিদে সরকারি খুতবা পাঠ শুরুও হয়েছে।
তবে কেউ চাইলে ভিন্ন খুতবাও দিতে পারবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। মিশরীয় ইমামদের সংগঠন ফ্রি ইমামস মুভমেন্ট’র কো-অর্ডিনেটর ইব্রাহিম আবদ আল ফাত্তাহ জানান, ধর্মীয় শিক্ষা স্তব্ধ করে দেয়ার জন্যই এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এসব খুতবা নবায়নও করা যাবে না। এর মাধ্যমে ইসলাম প্রচার বাধাগ্রস্ত করা হবে।
তবে এটা মিশরের আলেম সমাজ মেনে নেবে না বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। ইব্রাহিম বলেন, সরকার মসজিদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করছে। এটা ব্যর্থ হবে। মিশরের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দাওয়াহ বিভাগের পরিচালক বলেন, ২০১৪ সালে বিষয়টি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনেক ইমাম তাদের খুতবায় দলীয় বিষয় এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশেও মসজিদগুলোতে খুতবা নির্ধারণ করে দিচ্ছে ইসলামি ফাউন্ডেশন। দেশের তিন লাখ মসজিদে প্রতি সপ্তাহে খুতবা নির্ধারণ করে সরকারি এই সংস্থাটি। তবে এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্কও। ইসলামি ফাউন্ডেশনের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে অস্বীকার করেছে অনেক আলেম।
প্রসঙ্গত, মিশরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির ক্ষমতা দখল করে বর্তমান সামরিক শাসক আবদুল ফাত্তাহ আল সিসি। এরপর থেকে মুরসিকে বিভিন্ন মামলায় কারাদণ্ড এবং মৃত্যুদণ্ড দেয়া ছাড়াও দলটির নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় সিসি সরকার।