ঝালকাঠি: অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও বাংলার বাঘ খ্যাত শের-ই বাংলা একে ফজলুল হকের ১৪৩ তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৭৩ সালের এই দিনে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়ার মিয়া বাড়িতে মাতুলালয়ে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ওয়াজেদ আলী একজন প্রখ্যাত আইনজীবী ছিলেন। এবং তার মাতা বেগম সৈয়েদুন্নেছা একজন গৃহিনী। শের-ই বাংলার জন্মস্থানে তাঁর বহু জন্মস্মৃতি থাকলেও তা এখন বিলুপ্ত প্রায়। অযতœ অবহেলায় পড়ে আছে শের-ই বাংলার জন্মভবনটি। তার জন্মের প্রায় দেড়শ বছর কেটে গেলেও অবহেলা ও অযতেœ পড়ে রয়েছে তার জন্মস্থান।
২৬ অক্টোবর শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হকের ১৪৩ তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৭৩ সালের এই দিনে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়ার মিয়া বাড়ি মাতুলালয়ে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শের-ই বাংলার জন্মস্থানে তাঁর বহু জন্মস্মৃতি থাকলেও তা এখন বিলুপ্ত প্রায়। আজ পর্যন্ত এখানে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। অযতœ অবহেলায় পড়ে আছে শের-ই বাংলার জন্মভূমি। তার জন্মের প্রায় দেড়শ বছর কেটে গেলেও অবহেলায় পড়ে রয়েছে তার জন্মস্থান। তবে সম্প্রতি প্রতœতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে তার জন্মভবনটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে তা দায়সারা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বরিশাল-খুলনা মহা-সড়কের রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে শের-ই বাংলার জন্মস্থান ও তার জন্মস্মৃতি দেখতে দূর দূরান্ত থেকে প্রতিনিয়ন বহু পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন। তবে তারা হতাশ হয়ে ফিরে যান তার জন্মস্মৃতি আর জরাজীর্ণ ধ্বংসস্তুপ দেখে।
মিয়া বাড়ী জামে মসজিদের ইমাম হযরত আলী জানান, এ বাড়িতেই জন্মগ্রহন করেন শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক। শৈশবের বেশির ভাগ সময় তিনি কাটিয়েছেন তাঁর এই নানার বাড়িতেই। এখানে ঘাট বাঁধানো পুকুরে গোসল করা, পাশের নদীতে সাঁতার কাটাসহ অনেক স্মৃতি পড়ে আছে এই বাড়িতে। তিনি অবিভক্ত বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও একাধিকবার এই বাড়ীতে এসেছেন। তবে তাঁর জন্মস্থান সাতুরিয়ায় মিয়া বাড়ির সেই আঁতুরঘর ও দালান এখন জড়াজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। মাত্র কয়েকবছর আগেও শের-ই বাংলার ব্যবহৃত বহু আসবাবপত্র এই বাড়িতে পড়ে থাকতে দেখা গেলেও মূল্যবান ওইসব জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে।
একে ফজলুল হক প্রতিষ্ঠিত সাতুরিয়া এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মোঃ ফজলুল হক আকন জানান, শের-ই বাংলা ১৯৪১ সালে তার খালার নামে মেহেরুন ন্নেছা মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করলেও তার এখন বেহাল অবস্থা। ভবন, শিক্ষক, বেঞ্চ সংকটসহ শিক্ষা ব্যবস্থার নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
তবে খুলনা বিভাগীয় প্রতœতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে সাড়ে ৪লাখ টাকা ব্যায়ে তার জন্মভবনটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত এক সপ্তাহ আগে এ সংস্কার শুরু হলেও তা দায়সারা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এম,এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সোলায়মান হোসেন জানান, আমরা নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা এখানে বেড়াতে আসি শের ই বাংলার জীবন ইতিহাস সম্পর্কে দেখতে শুনতে, জানতে। কিন্তু শের-ই বাংলার ব্যবহারিক কোন জিনিসপত্র এখানে না থাকায় আমরা বঞ্চিত হচ্ছি শের-ই বাংলার জীবন সম্পর্কে জ্ঞানার্জন ও অনুপ্রেরনা পাওয়া থেকে।
তবে স্থানীয়সহ দূর দূরান্ত থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের এখানে একটি শের-ই বাংলা স্মৃতি জাদুঘর নির্মানের দাবী।
রাজাপুর উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত)নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হকের জন্মস্মৃতি রক্ষা ও এখানে জাদুঘর নির্মানের ব্যাপারে আমাদের আন্তরিক চেষ্টা থাকবে। তিনি আরো জানান, প্রতœতত্ব অধিদপ্তর কাজ শুরু করেছে। বাকি কাজগুলোও অচিরেই হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শের-ই বাংলার জন্ম স্মৃতি রক্ষার নামে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল সরকার। তবে সে প্রকল্প আর আলোর মুখ দেখেনি। তবে এখন হচ্ছে দায়সারা কাজ। শের-ই বাংলার স্মৃতি রক্ষার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপের দাবী করেছেন স্থানীয়রা।
শের-ই বাংলার ১৪৩ তম জন্ম বার্ষিকী-দেড়’শ বছর পরেও অবহেলিত শের-ই বাংলার জন্মস্থান,নেই কোনো স্মৃতিচিহ্নি
![](https://www.rockinrioacademy.com/wp-content/uploads/2016/10/unnamed-13-1.jpg)